সমুদ্রের পেটে চলে যাবে মায়ানগরী। সমুদ্রের তীরে অবস্থিত ভারতের শহরের ভাগ্যে এমনই ফাঁড়ার কথা জানা গিয়েছে একটি নতুন গবেষণায়। সমুদ্রের জলস্তর বেড়ে যাওয়ার জন্য ২০৫০ সালের মধ্যে পূর্ববর্তী অনুমানের চেয়েও তিনগুণ বেশি মানুষ জলের তলায় তলিয়ে যাবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতের বাণিজ্য নগরী মুম্বই ‘নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি’র মুখােমুখি বলে জানানাে হয়েছে ওই গবেষণায়। নিউ জার্সিতে অবস্থিত বিজ্ঞান সংস্থা ক্লাইমেট সেন্ট্রাল এই গবেষণা পত্রটি তৈরি করেছে এবং ‘নেচার কমিউনিকেশনস’ জার্নালে তা প্রকাশিতও হয়েছে। তবে, এই গবেষণায় ভবিষ্যতের জনসংখ্যা বৃদ্ধি বা উপকুলীয় ক্ষয়ের ফলে জমির হ্রাসমানতার অনুমানগুলি বিবেচনা করা হয়নি।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, গবেষকরা ‘উপগ্রহ মারফত পাঠানাে প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে স্থলভাগের উচ্চতা গণনা করার আরও সঠিক পদ্ধতি তৈরি করেছে। বৃহত্তর অঞ্চলের উপর সমুদ্র-স্তর বৃদ্ধির প্রভাবগুলি অনুমান করার জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতি এবং দেখা গিয়েছে যে এভাবে বেশ সঠিকভাবেই বিভিন্ন এলাকার ভবিষ্যৎ নির্ণয় করা সহজ হয়ে যাচ্ছে’।
নতুন এই গবেষণা অনুসারে, প্রায় দেড় কোটি মানুষ এখন এমন একটি জমির উপর বসবাস করছেন, যা এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়েই উচ্চ-জোয়ারের সীমার নীচে থাকবে। নতুন এই অনুমান অনুসারে ভারতের অর্থনৈতিক রাজধানী বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ের বেশির ভাগ অংশই নিশ্চিহ্ন হওয়ার ঝুঁকির মুখে।
এই গবেষণা জানাচ্ছে, একসময় মূলত বহু দ্বীপপুঞ্জের উপরেই নির্মিত হয়েছিল এই মায়ানগরী। শহরের ঐতিহাসিক মূল কেন্দ্রটি বেশ দুর্বল। অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থার তরফে ডিনা লােনস্কো বলেন, ‘সামগ্রিক গবেষণার ফলে আমরা যা দেখছি, দেশের এক্ষুণি আরও বেশি পরিমাণে নাগরিকদের অভ্যন্তরীণভাবে স্থানান্তরিত করার জন্য প্রস্তুতি শুরু করা উচিত’।
অভিবাসনের আন্তর্জাতিক এই সংস্থা হল একটি আন্তঃ-সরকারি গােষ্ঠী, যা মাইগ্রেশন বা অভিবাসন এবং উন্নয়ন বিষয়ক ক্রিয়াকলাপকে সমন্বিত করে। আমরা কেবল মানুষ ও সরকারকে সচেতন করার চেষ্টা করেছি। আমরা জানিই যে এমনটা হবেই হবে। এই বিপুল জনসংখ্যার অভিবাসনের বিষয়টিকে আধুনিকভাবে সমাধান করতে হবে, বলেন লােনস্কো।