জম্মু ও কাশ্মীরের গান্ডেরবাল জেলার সোনমার্গে নির্মীয়মান সুড়ঙ্গে জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করল পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার শাখা টিআরএফ। রবিবারের জঙ্গি হামলায় এখনও পর্যন্ত আট জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁদের মধ্যে সাত জন পরিযায়ী শ্রমিক এবং এক জন চিকিৎসক। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, এই হামলার মাস্টারমাইন্ড তথা টিআরএফ প্রধান সাজ্জাদ গুল পাকিস্তানে বসে গোটা ঘটনার ছক কষেছিল। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ। এদিকে এই ঘটনার পর পাকিস্তানের উদ্দেশে কড়া প্রতিক্রিয়া দেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রধান ফারুক আবদুল্লা। ফারুক বলেন, ‘পাকিস্তান যদি ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় তাহলে তাদের এই ধরণের কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে। কাশ্মীর কখনও পাকিস্তান হবে না। আমরা মর্যাদার সঙ্গে বাঁচব এবং সফল হব।
এই হামলার তিবত্র নিন্দা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী নিতিন গড়করি, লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা এবং জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা।
এই হামলা ঘটানোর আগে গত এক মাস ধরে ঘগটনাস্থলে রেইকি করা হয় বলে জানা গেছে। মূলত গত দেড় বছরে কাশ্মীরি পণ্ডিত, শিখ এবং এবং কাশ্মীরের বাসিন্দা নন এমন ব্যক্তিদের নিশানা করে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের এই জঙ্গি সংগঠনটি। তবে এই প্রথম কৌশল পরিবর্তন করে নির্মীয়মান এক সুড়ঙ্গে হামলা চালানো হল।
হামলার দায় স্বীকার করে নেওয়ার পর পাকিস্তানকে কড়া আক্রমণ করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স সভাপতি ফারুক আবদুল্লা। তিনি বলেন, ‘সাধারণ, নিরস্ত্র মানুষের উপর হামলা চালিয়ে পাকিস্তান ঠিক কাজ করছে না. এরপর তারা আলোচনায় বসতে চাইলে কেউ সহমত হবে না। তারা যদি মনে করে থাকে এই ধরণের হামলা চালিয়ে কিংবা ভয় দেখিয়ে কাশ্মীর দখল করবে , তাহলে ভুল ভাবছে। কাশ্মীর কখনোই পাকিস্তান হবে না। ‘
উল্লেখ্য, রবিবার রাতে সন্ধেবেলা নির্মীয়মাণ একটি সুড়ঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। এই হামলায় এক জন স্থানীয় চিকিৎসক ও ৭ পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়। আহত হন ১০ জনেরও বেশি। এইএই ঘটনা তীব্র নিন্দা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পাকিস্তানের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। তিনি বলেন, যারা জম্মু কাশ্মীরে হামলা চালিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে তাদের রেয়াৎ করা হবে না। এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও।
প্রসঙ্গত, শ্রীনগর-লে জাতীয় সড়কের উপর একটি টানেল তৈরী হচ্ছে কেন্দ্রের তরফে। রবিবার সেই টানেলে কাজ সেরে ফিরছিলেন শ্রমিকরা। সেই সময় তাঁদের উপর হঠাৎই আক্রমণ চালায় জঙ্গিরা। কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলোপাথাড়ি গুলি চালানো শুরু হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ২ পরিযায়ী শ্রমিকের। বাকিদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁদের মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ। বিশেষ দল গঠন করে তদন্ত করছে তারা। এই হামলার ঘটনায় স্থানীয় কেউ যুক্ত কিনা তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।